ত্বকের প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে মধু। ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে, বলিরেখা কমিয়ে ত্বক টানটান করতে ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে ত্বক সুরক্ষিত রাখতে মধুর জুড়ি নেই। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ভাইরাল উপাদান। নিয়মিত মধু ব্যবহার করলে ত্বক হয় উজ্জ্বল ও সুন্দর। নিয়মিত রূপচর্চায় মধু রাখলে ত্বকের নানা সমস্যা থেকেও রেহাই পাওয়া যায় সহজেই। চলুন জেনে নেই মধু দিয়ে রূপচর্চার উপায়-
উজ্জ্বলতা বাড়াতেঃ
চা চামচ মধু সরাসরি মুখে লাগান। ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ত্বক। প্রতিদিন ২ বার লাগালে ত্বকে আসবে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা।
মুখের দাগ দূর করতেঃ
মুখের দাগ দূর করতে মধু, আমন্ড অয়েল, গুঁড়া দুধ এবং লেবুর রস পরিমাণমতো মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগান। ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। ব্রণ বা রোদে পোড়া দাগ দূর করতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
নতুন কোষের গজানোর জন্যঃ
মধুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, এনজাইম ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানে পরিপূর্ণ। যা ত্বক করে পরিষ্কার, স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও মসৃণ। অন্যদিকে, বেকিং সোডাও ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের মৃতকোষ তুলে নতুন কোষ গঠনে সাহায্য করে।
ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করতেঃ
১ টেবিল-চামচ বেকিং সোডার সঙ্গে ২ টেবিল-চামচ মধু মিশিয়ে পানিতে মুখ ধুয়ে মিশ্রণটি মুখে বা শরীরে বৃত্তাকারে হালকাভাবে মালিশ করে কিছুক্ষণ পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার হবে।
ত্বক কোমল করতেঃ
দই ও মধু একসঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করুন ফেসপ্যাক। হাত-পা ও মুখের ত্বকে লাগান। শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত করলে কোমল হবে ত্বক।
ব্রন দূর করতেঃ
কিশোরী থেকে শুরু করে মোটামুটি সব বয়সের মানুষের জন্য ব্রণ একটি চিন্তার কারণ। মধুর অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ত্বকের লালচেভাব ও জ্বালাপোড়া কমিয়ে ত্বক ব্রণের হাত থেকে রক্ষা করবে। আক্রান্ত স্থানে মধু লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
ত্বকের বলিরেখা দূর করতেঃ
ত্বকের বলিরেখা দূর করার জন্য অত্যন্ত কার্যকরী এ ফেসপ্যাকটি। ডিমের সঙ্গে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে ত্বকে লাগান। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। ত্বক টানটান করতেও সাহায্য করবে এটি।
চুলের রুক্ষভাব দূর করতেঃ
২ চামচ মধু, ৩ চামচ অলিভ অয়েল এবং টক দই একসঙ্গে মিশিয়ে চুলে লাগান। ৩০ মিনিট রেখে চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। চুলের রুক্ষভাব দূর করে ময়েশ্চার এবং হেয়ার ফলিকল উজ্জীবিত করে চুল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
চুল হাইলাইট করতেঃ
চুল হাইলাইট বর্তমান ফ্যাশনে দারুণ জনপ্রিয়। তবে রাসায়নিক রং চুলের ক্ষতি করতে পারে এই ভয়ে অনেকেই চুলে রং এড়িয়ে চলেন। তবে মধুর বিশেষ কিছু উপাদান আছে যা ধীরে ধীরে চুলের রং হালকা করতে সাহায্য করে। অর্থাৎ প্রাকৃতিকভাবে চুল হাইলাইটস করার জন্য দারুণ কার্যকর মধু।
৩ টেবিল-চামচ মধুর সঙ্গে ১ টেবিল-চামচ পানি মিশিয়ে তা পরিষ্কার চুলে ১ ঘণ্টার জন্য লাগিয়ে রাখুন। পরে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার ব্যবহারে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
চুলের ফ্রিজি ভাব দূর করতেঃ
চুলের ফ্রিজি ভাব দূর করতে ও চুল সিল্কি রাখতে শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনারের সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে চুলের নিচের অংশে ভালভাবে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন। চাইলে কন্ডিশনারের বোতলে পরিমাণমতো মধু মিশিয়ে রেখে দিতে পারেন।
ত্বক উজ্জল করতেঃ
এক টেবির চামচ মধু, কয়েক ফোঁটা গোলাপজল ও সামান্য হলুদের গুঁড়ো একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান। ১৫ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বককে এক নিমিষেই উজ্জ্বল করবে।
তৈলাক্ত ভাব দূর করতেঃ
যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা শসাররসের সঙ্গে মধু ও লেবুর রসমিশিয়ে প্যাক তৈরি করতে পারেন। তুলার প্যাডদিয়ে আলতোভাবে মুখে লাগিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।