আপনার সৌন্দর্য বাড়াবে অ্যাপেল সিডার ভিনিগার
আপনি কি প্রচুর খান ? খেয়ে খেয়ে মোটা হয়ে যাচ্ছেন? চিন্তা না করে একটু অ্যাপেল সিডার ভিনিগার খেয়ে নিন। দেখবেন আর খিদে পাচ্ছে না। রান্নাবান্নায় এর ব্যবহারও অনবদ্য। তাছাড়াও এটি শারীরিক নানা সমস্যাও দূর করে। অ্যাপেল সিডার ভিনিগারের অনেক গুণ। এটি শরীরের ক্ষতিকারক টক্সিন দূর করে, শ্লেষ্মা দূর করে আর ব্লাড কলেস্টরল নিয়ন্ত্রণ করে।পাশাপাশি এই ভিনিগার আপনাকে সুন্দর থাকতেও সাহায্য করবে। জেনে নিন, কীভাবে এই ভিনিগার ব্যবহার করলে আপনি হয়ে উঠবেন আরও সুন্দর-
ত্বক পরিষ্কারের কাজে
সারাদিন বাইরের ধুলোময়লা থেকে আসার পর ত্বক সঠিকভাবে পরিষ্কার করতে চাইলে ফেসওয়াশের সঙ্গে ২ ফোঁটা অ্যাপেল সিডার ভিনিগার মিশিয়ে নিন। এরপর ওই মিশ্রণ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। এতে ত্বকের ক্লান্তি দূর হবে এবং ত্বক পরিষ্কার থাকবে।
রোদে পোড়ার দাগ ঠিক করতে
আপনি রোদে খুব বেশি ঘোরাফেরা করেন? রোদে ঘুরে ঘুরে আপনার সানবার্ন হয়ে গেছে? চিন্তা না করে আধকাপ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার নিন। এর সঙ্গে ৪ কাপ জল মেশান। এবার এটি তুলোয় করে গোটা মুখে লাগিয়ে নিন। সানবার্ন কমে যাবে। এটি ত্বকের Ph লেভেলকে ব্যালেন্স করতেও সাহায্য করে। এছাড়াও এটি ফোস্কা সারাতেও কাজ দেয়।
টোনার
অ্যাপেল সিডার ভিনিগার ত্বককে খুব ভালো টোনিং করে। মুখ ফেসওয়াশ দিয়ে ধুয়ে একটি তুলাতে অ্যাপেল সিডার ভিনিগার নিয়ে পুরো মুখে লাগিয়ে নিন। এতে ত্বকের দাগ চলে যাবে এবং মুখের ব্রণর প্রভাব কমবে।
ক্লান্তি দূর করবার জন্য
অ্যাপেল সিডার ভিনিগার হাত-পায়ে লাগিয়ে রাখলে সারাদিনের ক্লান্তি দূরে হয়ে যায়।
আঁচিল বা জরুল দূর করতে
অ্যাপেল সিডার ভিনিগারের ব্যবহার করলে জরুল বা আঁচিল খসে পড়ে। তুলোয় কয়েক ফোঁটা অ্যাপেল সিডার ভিনিগার নিয়ে জরুল বা আঁচিলের উপর চেপে ধরুন। ব্যান্ডেজ বা টেপ দিয়ে আটকে রাখুন সারারাত। সকালে উঠে দেখবেন জরুল বা আঁচিল খসে গেছে।
দাঁতের যত্নে
দাঁতের হলদেটে ভাব দূর করার জন্যও অ্যাপেল সিডার ভিনিগার খুব ভালো। ব্রাশ করার পর টুথব্রাশে অ্যাপেল সিডার ভিনিগার লাগিয়ে দাঁতে ঘষুন। ২ মিনিট ঘষার পর মুখ ধুয়ে নিন। দাঁতের দাগ চলে যাবে।
উজ্জ্বল ত্বকের জন্য
উজ্জ্বল ত্বকের জন্য যে কোনও ফেসপ্যাকে অল্প করে অ্যাপেল সিডার ভিনিগার মিশিয়ে নিন। ২ চামচ কমলা লেবুর খোসা গুঁড়ো, ১ চামচ টক দই এবং ২ চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার মিশিয়ে নিন। এই প্যাকটি ত্বকে ২০ মিনিট রেখে দিন। তারপর ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বক সঙ্গে সঙ্গে উজ্জ্বল দেখায়।
রক্তে শর্করা পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ
আপেল সিডার ভিনেগার ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করা পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। কিছু গবেষণায় বলা হয়েছে, উচ্চ শর্করাযুক্ত খাবার গ্রহণের পর আপেল সিডার ভিনেগার খেলে ৩৪ শতাংশ ইনসুলিন সংবেদনশীলতার উন্নয়ন করে এবং রক্তে শর্করা পরিমাণ পর্যাপ্ত কমায়। তবে আপনি যদি ডায়াবেটিসের ওষুধ খান তাহলে আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার আগে অবশ্য চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়
আপেল সিডার ভিনেগার ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়- বিভিন্ন গবেষণায় প্রায়শই এমন দাবি করা হয়ে থাকে। পরীক্ষাগারের গবেষণায় দেখানো হয়েছে, ক্যানসারের কোষ হত্যায় ভিনেগার কাজ করে। কিছু পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণায় বলা হয়েছে, খাদ্যনালীর ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে আপেল সিডার ভিনেগার কাজ করে। তবে এসব গবেষণার কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়নি।
গলার স্বর ঠিক রাখতে
গলার স্বর ভেঙ্গে গেলে তা ঠিক করতে আপেল সিডার ভিনেগারের ব্যবহার একটি জনপ্রিয় ঘরোয়া পদ্ধতি। মনে করা হয়, এটি অ্যান্টি ব্যকটেরিয়া, যার দ্বারা গলায় সমস্যা তৈরি করা ব্যকটেরিয়াগুলোকে ধ্বংস করা যায়। তবে এর পক্ষে কোনো শক্ত প্রমান নেই।
গোসলের সময়
যে কারণে মানুষ আপেল সিডার ভিনেগার মুখের ত্বকচর্চায় ব্যবহার করে ঠিক একই কারণে এটি গোসলের সময়ও ব্যবহার করা যায়। ত্বক মসৃন ও সমস্যামুক্ত রাখতে আপেল সিডার ভিনেগার অত্যন্ত কার্যকরি। আপনি গোসলের জলের ভিতর ১/২ কাপ আপেল সিডার ভিনেগার ঢেলে দিন। এবং গোসল করুন। এতে আপনার শরীরের ত্বক অত্যন্ত ভালো থাকবে।
খুশকি কমাতে
হালকা পানি ও ভিনেগার মিশিয়ে তা দিয়ে মাথা মাসাজ করলে খুশকি কমার সম্ভাবণা রয়েছে। পরিষ্কার নয় যে এটি কিভাবে কাজ করে। তবে ডাক্তারি তত্ত্বের মতে, ভিনেগারের অ্যাসিড মাথার ত্বকে মালাসেজিয়া নামক ছত্রাক প্রতিরোধ করে। যে ছত্রাক খুশকি বিস্তারে সহায়তা করে।
প্রাকৃতিক ডিওডোরেন্ট হিসেবে
নিজেকে আকর্ষণীয় করতে তুলতে নানা রকম সুগন্ধী ব্যবহৃত হয়। তবে বাড়িতেই খুব ভালো প্রাকৃতিক সুগন্ধী বা ডিওডোরেন্ট তৈরি করা যায়। যার মূল উপাদানই হলো আপেল সিডার ভিনেগার।